বাংলাদেশে বিনিয়োগে চীনা বিনিয়োগকারীদের প্রতি আহ্বান বেপজা নির্বাহী চেয়ারম্যানের

0
5

নিউজ ডেস্ক

  • প্রকাশ: ডিসেম্বর ১৬, ২০২৪

ছবি: বেপজা

দেশের রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকাগুলোয় (ইপিজেড) চীনা বিনিয়োগকারীরা ১০৭টি শিল্প ইউনিট স্থাপন করেছেন। এসব কারখানা স্থাপনে ১.৬ বিলিয়ন আমেরিকান ডলার বিনিয়োগ হয়েছে। আর কারখানাগুলোয় ১ লাখ ৩৩ হাজার বাংলাদেশি নাগরিকের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।

ইপিজেডগুলোয় চীনসহ বিদেশি বিনিয়োগ বাড়াতে নানা উদ্যোগ নিচ্ছে বাংলাদেশ রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা কর্তৃপক্ষ (বেপজা)। এরই অংশ হিসেবে সোমবার চীনের নিংবো শহরে একটি বিনিয়োগ সেমিনারের আয়োজন করা হয়। বেপজা ও নিংবো ডাস্যিঁয়ে চেম্বার অব কমার্স যৌথভাবে সেমিনারটি আয়োজন করে।

বেপজা এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানিয়েছে।

বাংলাদেশে বিনিয়োগের সুবর্ণ সুযোগ কাজে লাগাতে চীনা বিনিয়োগকারীদের প্রতি আহবান জানিয়েছেন বাংলাদেশ রপ্তানী প্রক্রিয়াকরণ এলাকা কর্তৃপক্ষ (বেপজা)-এর নির্বাহী চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল আবুল কালাম মোহাম্মদ জিয়াউর রহমান।

‘বেজাধীন ইপিজেড এবং অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিনিয়োগ সম্ভাবনা’ শীর্ষক সেমিনারে তিনি বলেন ‘আসুন, বাংলাদেশে বিনিয়োগের সুবর্ণ সুযোগ অন্বেষণ করুন, যেখানে সম্ভাবনা মিলিত হয় কর্মক্ষমতায় এবং অংশীদারিত্ব সমৃদ্ধির দিকে ধাবিত করে।’

বাংলাদেশের কৌশলগত অবস্থান এবং গতিশীল অর্থনীতির গুরুত্ব তুলে ধরে বেপজা নির্বাহী চেয়ারম্যান বলেন,‘বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়া এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সংযোগ স্থলে অবস্থিত, যা আঞ্চলিক এবং আন্তর্জাতিক বাজারে সহজ প্রবেশাধিকার প্রদান করে। আমাদের ১৮ কোটির বেশি জনসংখ্যা, যা প্রধানত তরুণ, শিক্ষিত এবং অত্যন্ত দক্ষ, এমন একটি শক্তিশালী শ্রমশক্তি নিশ্চিত করে যা ব্যবসাকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে পারে।’

তিনি বলেন, বাংলাদেশে বিনিয়োগের মূল আকর্ষণ হল এদেশের সস্তা ও সহজে প্রশিক্ষণযোগ্য শ্রমশক্তি এবং শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি যা এশিয়ার মধ্যে সবচেয়ে কম। বিদেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য একটি সহায়ক পরিবেশ নিশ্চিত করতে বাংলাদেশের বিনিয়োগ নীতিসমূহ ক্রমাগত উদারীকরণ করা হয়েছে।

মেজর জেনারেল রহমান বেপজার ভবিষ্যত পরিকল্পনা সম্পর্কেও আলোকপাত করেন, যার মধ্যে রয়েছে মীরসরাই, চট্টগ্রামে বেপজা অর্থনৈতিক অঞ্চলের উন্নয়ন, যেখানে ইতোমধ্যে ৪১টি প্রতিষ্ঠান শিল্প স্থাপনের লক্ষ্যে বেপজার সাথে চুক্তি সম্পাদন করেছে। এছাড়া, যশোর, পটুয়াখালী এবং গাইবান্ধা জেলায় তিনটি নতুন ইপিজেড স্থাপনের কাজও চলছে, যা ২০২৫ সালের শেষ নাগাদ বিনিয়োগের জন্য প্রস্তুত হবে।

নিংবো ডেক্সি চেম্বার অব কমার্স-এর নির্বাহী পরিচালক চাও চুইং চীন এবং বাংলাদেশের মধ্যে ক্রমবর্ধমান অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক সহযোগিতা সম্পর্কে আলোচনা করেন। তিনি বলেন, চীন বাংলাদেশের উন্নয়নে একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার, যেখানে প্রথাগত শিল্প যেমন পাট এবং চামড়া থেকে শুরু করে নতুন ক্ষেত্র যেমন ডিজিটাল অর্থনীতি এবং পরিবেশ রক্ষায় দুই দেশের সহযোগিতা বিস্তৃত হচ্ছে।

চুইং বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি যে চীন এবং বাংলাদেশের সহযোগিতা আরও বাড়বে, যা উভয় দেশের জন্য ফলপ্রসু হবে’।

নিংবো আসিয়ে চেম্বার অব কমার্স-এর সেক্রেটারি জেনারেল চাও মু জি সেমিনারের গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন, এই সেমিনার চীনা বিনিয়োগকারীদের মধ্যে বাংলাদেশে বিনিয়োগের পরিবেশ ও সম্ভাবনা নিয়ে আরও জানার সুযোগ সৃষ্টি করবে। তিনি চীনা বিনিয়োগকারীদের বাংলাদেশের ইপিজেড এবং বেপজা অর্থনৈতিক অঞ্চলের সুবিধাগুলো অন্বেষণ করার সুযোগের কথা তুলে ধরেন।

উল্লেখ্য, এ পর্যন্ত ৩৮টি দেশের বিনিয়োগকারী বেপজাধীন ইপিজেড এবং বেপজা অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিনিয়োগ করেছেন, যেখানে ৪৪৯টি চালু শিল্প প্রতিষ্ঠানে মোট বিনিয়োগের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৬.৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। প্রতিষ্ঠানসমূহে ৫ লাখের অধিক বাংলাদেশি কর্মরত রয়েছে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে